নিজস্ব প্রতিবেদক:
টঙ্গী গাজীপুর একটি প্রতিশ্রুতিশীল বাণিজ্যিক প্রকল্প ‘ক্যাপিটা টাইমস স্কয়ার’ দীর্ঘ দুই দশকেও ব্যবসায়ীদের কাছে তাদের বৈধ মালিকানা বুঝিয়ে দিতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত পাচ শতাধিক দোকান মালিক বছরের পর বছর ধরে প্রতারণা ও জুলুমের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।
২০০৫ সালের নভেম্বরে ‘কেপিটা টাইমস স্কয়ার মার্কেট’ নামক এ প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কর্তৃপক্ষ ৩৬টি কিস্তিতে দোকান বিক্রির ঘোষণা দিয়ে, ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে। তৎকালীন সময় দোকান হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ২০১০ সালের মধ্যে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও এখনও মার্কেটের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
২০১২ সালে ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ স্কয়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে, যা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল না। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে এসি ও টাইলসের খরচ কয়েকগুণ বাড়িয়ে মালিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। ক্রেতাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, একাধিকবার মিথ্যা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্তৃপক্ষ শুধু সময় ক্ষেপণ করেছে।
২০১৭ সালের মে মাসে দোকান হস্তান্তরের চূড়ান্ত সময়সীমা হিসেবে ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয় এবং জানানো হয়,২০১৮ জানুয়ারী নির্ধারিত সময়ে হস্তান্তর না হলে প্রতি দোকান মালিককে মাসে ৩০০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করা হবে। তবে বাস্তবে নির্মাণ কাজ তখনো ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রসর হয়নি।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে কিছু মালিককে ডেকে প্রতীকী দোকান হস্তান্তরের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আবারো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সময়ও প্রকল্পটির বেশিরভাগ অংশ ছিল অসম্পূর্ণ।
পরবর্তীতে, বিদ্যুৎ সংযোগ ফি, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য নানা খাতে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে একাধিকবার চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে সার্ভিস চার্জ ধরা হয় প্রতি বর্গফুটে ৯ টাকা, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি বর্গফুটে ৪০ টাকা। এই অর্থ নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করলে ১০ শতাংশ সুদ আরোপ করার হুমকিও দেওয়া হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত এক দোকান মালিক বলেন, “২০ বছর ধরে আমরা শুধু আশ্বাস আর চাপের শিকার। দোকান বুঝিয়ে না দিয়ে, উল্টো আমাদের কাছেই বিদ্যুৎ, সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন খরচ দাবি করা হচ্ছে। এটি একধরনের প্রতারণা ও শোষণ।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে মালিকগণ আরও বলেন, মার্কেটের তৃতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত এখনও অসম্পূর্ণ, অথচ কর্তৃপক্ষ সার্ভিস চার্জ দাবি করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ডেভেলপার কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।